অনলাইন ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, রোজা শুরুর আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। এই ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ এবং বাংলাদেশ বেতার একযোগে সম্প্রচার করে।
ভাষণে তিনি বলেন, নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে শিগগিরই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে চিঠি পাঠানো হবে, যাতে তিনি রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
এর আগে, আজ বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
নির্বাচন, সংস্কার ও বিচারই অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি মূল কাজ:
ভাষণে ইউনূস বলেন, “আমরা এখন আমাদের সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের দিকে এগোচ্ছি—নির্বাচন। একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
তিনি বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। এবার সেই ভোটাধিকার ফিরে পাবে। অনেকেই আছেন যারা জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেননি—তাদের জন্য এবারের নির্বাচন হবে একটি আনন্দঘন উৎসবের দিন।
গত এক বছরের প্রেক্ষাপট:
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তারপর থেকেই বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস। ওই বৈঠকের পর এক যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আজ ভাষণে তা নিশ্চিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন— নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে, রোজার আগেই।
“নির্বাচনের দিন হবে উৎসবের মতো”—প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চাই এবারের নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক এবং উৎসবমুখর। যেন এটি দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে। সবাই বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নতুন ভোটাররা ভোট দিবেন আনন্দ নিয়ে।”
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল থেকেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করা হবে—প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও, মানসিকভাবেও।