অনলাইন ডেস্ক
নিউইয়র্ক শহরের মুসলিমরা প্রতি বছর ঈদের সময় ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কে নামাজ পড়তে জড়ো হন। এ সময় শহরের ধর্মীয় ও জাতিগত বৈচিত্র্য চোখে পড়ে।
কিন্তু এবার উগ্রপন্থীরা সেই নামাজের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে এটিকে ‘অশুভ কাজ’ বলে প্রচার চালাচ্ছে। একই সঙ্গে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী মুসলিম নেতা জোহরান মামদানিকে টার্গেট করে অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে।
স্থানীয় ইতিহাসবিদ আসাদ দান্দিয়া বলেন, ‘এটা এক ধরনের ভয়ভীতি দেখানো। মনে হচ্ছে, আমরা সবসময় নজরদারিতে আছি।’ তাঁর মতে, মামদানি নির্বাচনে জেতার পর ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘যত পরিবর্তনই হোক, আসলে কিছুই বদলায়নি।’
ডানপন্থীদের ঘৃণামূলক প্রচার
কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা মামদানির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলছেন। কেউ বলছেন তিনি ‘জিহাদপন্থী’, কেউ বলছেন তাঁর সঙ্গে ইরান ও মুসলিম ব্রাদারহুডের সম্পর্ক আছে। কংগ্রেস সদস্যরা মামদানি সম্পর্কে ভিত্তিহীন কথা বলছেন, এমনকি তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার দাবিও উঠেছে।
একজন কংগ্রেস সদস্য মামদানিকে নিয়ে বিরিয়ানি খাওয়ার ভিডিও পোস্ট করে বলেন, ‘তাঁর উচিত তৃতীয় বিশ্বের দেশে ফিরে যাওয়া।’
ইসলামবিদ্বেষ যেন যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো রোগ
৯/১১ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ছড়ানো শুরু হয়। তখন বলা হয়, মুসলমানরা পশ্চিমা দেশে শরিয়াহ আইন চালু করতে চায়। এ সময়ে বহু ইসলামবিদ্বেষী ভাষ্যকার ও সংগঠনের উত্থান ঘটে। এসব প্রচারণা গণমাধ্যম ও রাজনীতিতে ইসলামভীতি বাড়াতে সাহায্য করে।
নিউইয়র্কেও মুসলিমরা নজরদারির শিকার হয়েছেন। মসজিদ, ব্যবসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করা হতো। মুসলিম কমিউনিটির অনেক পরিকল্পনা বাধার মুখে পড়ে।
প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন মুসলিমরা
তবে এখন পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। অধিকারকর্মীরা বলছেন, মুসলিমরা আগের চেয়ে বেশি সংগঠিত। নির্বাচনে মুসলিম ভোটাররা একজোট হয়ে কাজ করছেন।
নিউইয়র্ক কাউন্সিল সদস্য শাহানা হানিফ বলেন, ‘গত ২৫ বছরে আমরা শক্তিশালী একটি জোট তৈরি করেছি। এতে ইহুদি, এশীয়, লাতিনো, কৃষ্ণাঙ্গ সবাই রয়েছে। আমরা একে অপরের পাশে আছি।’