যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সোমবার (২৩ জুন) বোস্টনের জেলা আদালতের বিচারক অ্যালিসন বুরোস এই অন্তর্বর্তী আদেশ দেন।
রায়ে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তা ও বাক্স্বাধীনতার মতো মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে প্রশাসন একটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ ও ভিন্নমত দমনে উদ্যোগ নেয়। এতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ৬ মাসের জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পাশাপাশি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের কথাও ভাবতে বলা হয়।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর লঙ্ঘন, যা শিক্ষাব্যবস্থা ও মুক্তচিন্তায় সরাসরি হস্তক্ষেপ। প্রশাসনের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়টি আদালতের শরণাপন্ন হয়।
বর্তমানে হার্ভার্ডে প্রায় ৬,৮০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়ছেন, যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ। তাই আদালতের এ রায় তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থ ব্যবহারে অনিয়ম, ইহুদিবিরোধী মনোভাব এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ তোলে। তবে এসব অভিযোগের সপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
আদালতের রায়ে বলা হয়, প্রশাসন এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এখন থেকে সুশৃঙ্খল ও আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বাধ্য থাকবে। হার্ভার্ডের বিদেশি শিক্ষার্থীদের অধিকার অক্ষুণ্ন থাকবে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, “আমরা আমাদের মূল্যবোধ থেকে কখনো সরে আসব না। শিক্ষার স্বাধীনতা ও ন্যায়ের পক্ষে আমরা অটল থাকব।”