ডেস্ক রিপোর্ট
পঞ্চগড়ের এক কলেজছাত্রী উম্মে কুলসুম জুলি (২৩) বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া ইউনিয়নের ঘনিবিষ্ণুপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জুলি পঞ্চগড় সদর উপজেলার জোতহাসনা গ্রামের বাসিন্দা ও মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের ছাত্রী। পাশাপাশি তিনি অনলাইনে একটি মাদরাসা থেকে আলেমা কোর্স শেষ করে শিক্ষকতাও করতেন। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজেও যুক্ত ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, জুলি সকালে তার অসুস্থ বান্ধবীর মাকে দেখতে ঠাকুরগাঁও যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। সঙ্গে রান্না করা খাবারও নিয়ে যান। তিনি আগেই বন্ধু মাহাদী হাসান জয়কে জানান এবং পরে জয় তাকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যান।
পথে একটি ট্রাক্টরকে ওভারটেক করতে গিয়ে জুলি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। ঠিক তখনই ট্রাক্টরের চাকা তার মাথার উপর দিয়ে চলে গেলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় জয় তাকে দ্রুত পঞ্চগড়ে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ জয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
জুলির এক আত্মীয় সামিউল ইসলাম দাবি করেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটি পরিকল্পিত হত্যা। তিনি বলেন, “একজন সুস্থ মানুষ কি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে এভাবে মারা যায়?” তিনি আরও অভিযোগ করেন, জয় দুর্ঘটনার পর একাধিকবার পোশাক বদল করেছেন, যা সন্দেহজনক।
তবে অভিযুক্ত জয় দাবি করেন, “জুলি মাথা ঘুরে পড়ে যায়, এরপর একটি ট্রাক্টর তাকে চাপা দেয়। আমি তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করি।”
রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় জুলিকে দেখতে পান এবং একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন।
রুহিয়া থানার ওসি একেএম নাজমুল কাদের জানান, এখনো নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। মামলা করতে হলে তা ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানায় করতে হবে, কারণ ঘটনাটি সেখানেই ঘটেছে।