আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ভাষণের শুরুতে তিনি দেশের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, নারী-পুরুষ, সব বয়সের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা ও সালাম জানান। একই সঙ্গে তিনি সবাইকে হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“নির্বাচনের তারিখ নিয়ে রাজনৈতিক দল ও জনগণের আগ্রহ অনেক বেশি। আমি আগেও বলেছি, নির্বাচন ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ের মধ্যেই একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সরকার কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন,
“স্বাধীনতার পর দেশে যত বড় সংকট দেখা দিয়েছে, তার মূল কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন। এমন নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দল বারবার ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ফ্যাসিবাদী রূপ নেয়। এসব নির্বাচনের আয়োজক ও এতে ক্ষমতায় আসা দল—দু’পক্ষই জনগণের কাছে ঘৃণিত হয়ে পড়ে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন,
“এই সরকারের মূল দায়িত্ব হলো একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো সংকট তৈরি না হয়। এজন্য সবচেয়ে জরুরি হলো নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার আনা ও সুশাসন নিশ্চিত করা।”
তিনি জানান,
“সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি দায়িত্ব নিয়ে আমরা সরকারে এসেছি। আশা করি, আগামী রোজার ঈদের মধ্যেই সংস্কার ও বিচার কাজের একটি গ্রহণযোগ্য অগ্রগতি দেখতে পারব। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, যা জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মিলিত দায়, তাও দৃশ্যমান হবে।”
সবশেষে তিনি বলেন,
“আলোচনা ও চলমান সংস্কার পর্যালোচনা করে আমি ঘোষণা করছি, জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম ভাগে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন শিগগিরই বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে। আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই যা শহীদদের আত্মাকে শান্তি দেবে এবং জাতির কাছে ইতিহাসের সবচেয়ে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”