ডেস্ক রিপোর্ট
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে এবার কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। সোমবার (১৬ জুন) সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর সারোয়ার তুষার ও এক নারীর কথোপকথনের অডিও ফাঁস করার পর, মঙ্গলবার তিনি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন কথিত কুপ্রস্তাবের টেক্সট মেসেজের স্ক্রিনশট।
ফেসবুকে স্ক্রিনশট দুটি পোস্ট করে নির্ঝর লেখেন,
“সারোয়ার তুষারের সেই ঐতিহাসিক টেক্সট! আপনার কারণে গোটা এনসিপির সম্মান হুমকির মুখে পড়েছে। এনসিপি নেতারা নারীদের কতটা সম্মান করে, সেটা এখন সবার সামনে পরিষ্কার।”
নির্ঝর দাবি করেছেন, পুরো অডিওটি ৪৭ মিনিটের হলেও তিনি তার একটি ৩ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের অংশ ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, যেখানে সারোয়ার তুষারের কণ্ঠসদৃশ এক ব্যক্তিকে এক তরুণীর সঙ্গে কথোপকথনে শোনা যায়। ওই অডিওতে নারীটি অভিযোগ করেন, তাকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং ব্যক্তিগত ছবি চাইতে বলা হয়েছে। জবাবে ওই কণ্ঠসদৃশ ব্যক্তি বলেন, ছবি চাওয়ার পেছনে তাঁর কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না এবং তিনি বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
অডিও থেকে জানা যায়, কথোপকথনটি সম্ভবত রমজান মাসের কোনো এক সময়ের যেখানে ইফতারের পর সাক্ষাতের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে অডিওতে থাকা দুই ব্যক্তির পরিচয় নিরপেক্ষভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি সংবাদমাধ্যম।
উল্লেখ্য, সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বীথি সপ্তর্ষি নামে এক নারী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন। তখন ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ সংগঠনটি বিষয়টি তদন্তে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মির্জা তাসলিমা। কমিটিতে আরও ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া (পরবর্তী সময়ে তাঁর স্থলেসারোয়ার তুষারের কুপ্রস্তাবের স্ক্রিনশট ভাইরাল আসেন সাদিয়া আরমান) এবং গবেষক দিলশানা পারুল।
তদন্ত শেষে ওই কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিলেও অভিযোগের ‘গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নিষ্পত্তি’ হয়নি বলে জানানো হয়। কমিটির অন্যতম সদস্য ড. শহিদুল আলম গত ৬ মে এক ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।
এই সাম্প্রতিক অডিও ও স্ক্রিনশট ফাঁস হওয়ার পর সারোয়ার তুষার ও এনসিপিকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দলটির নারী নেতাদের প্রতি আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।