প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (২৭ মে) টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের সভাপতি তারো আসোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করেন। এ তথ্য প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়।
ড. ইউনূস জাপানের “নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়া”-তে অংশ নিতে এবং বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে টোকিও পৌঁছান।
সাক্ষাতে জাপানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো আসো বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ড. ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বলেন, একটি সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক নির্বাচন এখন অত্যন্ত জরুরি।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি প্রধান ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে—সংস্কার বাস্তবায়ন, ছাত্র-জনতার খুনিদের বিচার, এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন।
তিনি আরও বলেন, আগের সরকার দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অবস্থার প্রতিবাদেই দেশের তরুণেরা তাঁকে সংস্কারে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস জানান, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে, এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও উন্নত হয়েছে।
তিনি বলেন, জাপান গত ১০ মাসে বাংলাদেশের পাশে ছিল। সেই সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই সফর।
এ সময় তিনি তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে চলমান সংস্কার কার্যক্রমগুলো তিনি সরেজমিনে দেখতে পারেন।
সাক্ষাতে উপস্থিত জাপানি আইনপ্রণেতারা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, আগস্টের মধ্যে আলোচনার কাজ শেষ করে সেপ্টেম্বরেই চুক্তি সই করা যাবে। এই চুক্তি হলে, জাপান হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ সই করা প্রথম দেশ।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, এই সংকট অন্যান্য শরণার্থী সমস্যার চেয়ে আলাদা, কারণ রোহিঙ্গারা কোনো তৃতীয় দেশে নয়, বরং নিজেদের ঘরে ফিরে যেতে চায়। তিনি এই সংকট সমাধানে জাপানের সহায়তা কামনা করেন।
সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ।