বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা ধরে রেখেছেন ছাত্র প্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলম। তাঁদের পদত্যাগের দাবি মূলত পুরো সরকার ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার এক ষড়যন্ত্রের অংশ—এমনটাই মনে করছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তাঁর ভাষ্য, বিএনপি যমুনার সামনে গিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করছে, যেখানে ছাত্রদের দেওয়া রক্তের ম্যান্ডেটকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
নাসীরুদ্দীন জানান, এনসিপির প্রতিনিধিরা পূর্বে যমুনায় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় স্বার্থে, কোনো ব্যক্তিগত বা সরকার পতনের উদ্দেশ্যে নয়। কিন্তু বিএনপি যেভাবে সরকারবিরোধী উগ্র আন্দোলনে জড়াচ্ছে, তা স্পষ্টতই একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
তিনি অভিযোগ করেন, ইশরাক হোসেন ঢাকায় সরকার পতনের লক্ষ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। বর্তমান সরকারে থাকা দুই ছাত্র প্রতিনিধি কেউই এনসিপির সদস্য নন, বরং তাঁরা ছাত্রদের সার্বিক আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধি। উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হয়েছে সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেই।
নাসীরুদ্দীন আরও বলেন, সরকার গঠনের আগেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি মনোনয়নের অনুরোধ জানানো হয়। তখন আলোচনায় আসিফ নজরুল, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নাম উঠে আসে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, তাঁরা ছাত্র আন্দোলনের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।
তাঁর দাবি, আসিফ নজরুল বিএনপির পক্ষ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনে ভাঙন সৃষ্টি করেছেন। সালেহউদ্দিন আহমেদ ‘ভদ্রতার মুখোশ’ পরে আর্থিক খাতে বিএনপিকে সহায়তা করছেন এবং ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কারণে শিক্ষা খাতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ জন্য তিনি তাঁদের পদত্যাগ দাবি করেন।
এনসিপির পক্ষ থেকে নাসীরুদ্দীন অভিযোগ করেন, বিএনপি বিচার বিভাগে প্রভাব বিস্তার করে রাজনৈতিক রায় নিচ্ছে। ইশরাক হোসেনের পক্ষে রায় এর প্রমাণ, যা বিচার ব্যবস্থাকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, “২১ আগস্টের মতো ঘটনায় জড়িতদের রক্ষা ও নগর ভবন দখল করে খোকা পরিবারের পুনর্বাসন—এসবই বিএনপির রাজপরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এখন ‘ডাবল এজেন্ট’ হিসেবে পরিচিত।”
শেষে নাসীরুদ্দীন ঘোষণা দেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন এবং বিএনপিপন্থী উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা রাজপথে নামবেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর অপসারণের দাবিতে প্রয়োজনে বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের মতো বড় কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে।