রাজধানীর পল্লবী এলাকায় এক দম্পতিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য) দুপুরে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই গাউস মিয়া নামে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন—আইনের ছাত্রী দোলন আক্তার দোলা (২৯) ও তাঁর স্বামী নাজমুল হোসেন পাপ্পু (৩৫)। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দোলার সঙ্গে গাউস মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের টানাপড়েন থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ঘটনার দিন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পল্লবী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাউসকে গ্রেপ্তার এবং হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করে। ফরেনসিক আলামত সংগ্রহ করে সিআইডির একটি দল। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তাঁদের গ্রামের বাড়ি বরগুনায়।
পুলিশ জানিয়েছে, দোলা উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলএম (মাস্টার্স) করছিলেন। পল্লবীর মিরপুর ১১-এর একটি বাসার ৫ম তলায় স্বামীর সঙ্গে সাবলেট থাকতেন। পাপ্পু বরগুনায় চাকরি করতেন, মাঝে মধ্যে স্ত্রীকে দেখতে আসতেন।
গ্রেপ্তার গাউস মিয়া সৌদি আরব প্রবাসী, বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়। নয় মাস আগে ফেসবুকে দোলার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর ফোনালাপ এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ফিরে গাউস মিরপুরে দোলার বাসার কাছাকাছি একটি বাসা ভাড়া নেন। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে এবং দোলার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে গাউস দেখতে পান, দোলা একজন পুরুষের সঙ্গে রিকশায় যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি দোলার স্বামী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গাউস বাসায় ফিরে যান। পরে দুপুর ১টার দিকে ছুরি হাতে দোলার বাসায় গিয়ে কলিং বেল দেন। দরজা খুলে দিলে এক নারী গাউসের হাতে ছুরি দেখে ভয় পেয়ে বাইরে চলে যান এবং দরজা বন্ধ করে ৯৯৯-এ ফোন করেন। এ সময় গাউস ভেতরে ঢুকে প্রথমে পাপ্পুকে এবং পরে দোলাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটে যায়। পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার সালেহ মুহম্মদ জাকারিয়া জানান, গাউস মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে রাতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।