অনলাইন ডেস্ক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের জন্য নতুন ধরনের বন্দোবস্ত দরকার। পুরনো পদ্ধতিতে দেশ চালানোর ষড়যন্ত্র করছে একটি বিশেষ মহল। আমরা চাই নতুন নিয়মে দেশ পরিচালিত হোক। কারণ, পুরনো ব্যবস্থায় বাংলাদেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, নতুন সংবিধানে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি দিয়ে ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১ ও জুলাইয়ের আন্দোলনের চেতনায় দেশ চালাতে হবে।
শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের বেরীরপার পয়েন্টে ‘দেশ গড়তে জুলাই পথযাত্রা’ শেষে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাদ দিয়ে তা মুজিববাদী সংবিধানে পরিণত করা হয়। আমরা গত ৫৪ বছর ধরে একই চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছি। এ সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান করতে হবে।
তিনি বলেন, আসামে হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রেখেছে। এনসিপি বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় সম্প্রীতির রাজনীতি গড়ে তুলতে চায়। তিনি বলেন, আমরা নতুন সংবিধানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। এনসিপি লোক দেখানো উন্নয়নের রাজনীতি করে না, মৌলিক উন্নয়নে বিশ্বাসী। দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। ধর্মীয় ভাবাবেগ নিয়ে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের চিনে ফেলা হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বানিয়াচংয়ে পুলিশের হত্যার দায় অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা সত্য নয়। ৩ আগস্ট এক দফা দাবিতে আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, আমাদের আন্দোলন শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে। তখন আমাদের দমন করা হয়েছিল, তাই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল কর্মসংস্থান। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এই দাবি উপেক্ষা করছে।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে বিশ্বাসী। জনগণের টাকায় চলা কোনো দপ্তর বা বাহিনীকে জবাবদিহিতার বাইরে রাখা যাবে না। ঘুষ দিয়ে সেবা নিতে হবে—এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।
পথসভা শুরুর আগে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু হয়। এতে এনসিপির নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সমন্বয়কারী ফায়াদ আলম। উপস্থিত ছিলেন সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, যুগ্ম সদস্যসচিব সাদিয়া ফারজানা, সিলেট বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ, ডা. তাসনিম জারা, ছাত্র সংগঠক আবু বাকের মজুমদার, যুব সংগঠক ডা. জাহেদ, মারুফ আল হামিদ, জাকারিয়া ইমন, এহসান জাকারিয়া, সানাউল ইসলাম সুয়েজ, সৈয়দ মুফলে উস সালেকীন প্রমুখ।
পথসভার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রীমঙ্গলের ভিক্টোরিয়া হাইস্কুল মাঠে চা শ্রমিক ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সেখানে নেতাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।