অনলাইন ডেস্ক
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা কে হবেন এবং কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে, এ বিষয়ে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে। এ নিয়েই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে নানা প্রস্তাব।
একসময় সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তা ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করে সরকার। তবে হাইকোর্ট ২০২৩ সালে এই সংশোধনীর কিছু অংশ সাংবিধানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট নাগরিকেরা এই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন।
এ অবস্থায় সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চালুর সুপারিশ করেছে। আলোচনায় অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর বেশিরভাগই এ ব্যবস্থার পক্ষে, তবে প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে।
একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নির্বাহী, বিচার এবং আইনসভা—এই তিন বিভাগের সমন্বয়ে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন করে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করা হবে। তবে কিছু দল এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।
সংবিধানের পূর্ববর্তী ধারা অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার জন্য প্রথম পছন্দ হতেন সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। পরপর না পাওয়া গেলে বিকল্প ধাপে ধাপে নির্ধারণ করা হতো। তবে এই ব্যবস্থায়ও দলগুলোর মতপার্থক্য রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে সংসদ ভেঙে দেওয়ার আগে ১১ সদস্যের সর্বদলীয় কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ কমিটি বিভিন্ন দলের প্রস্তাবিত নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করবে।
এ ছাড়া নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও একটি বিকল্প প্রস্তাব এসেছে, যেখানে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে ৮ সদস্যের সমর্থনে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা করা হবে।
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এখন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার পক্ষে একমত হলেও প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আবার বৈঠক হবে।