অনলাইন ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য হতে হয়েছিল। এর ফলে দেশে নতুন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে যত দিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। এখন আবার গণতন্ত্রবিরোধীরা জোট বাঁধছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’।
ফখরুল বলেন, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের উন্নত ভবিষ্যৎ বিশ্বাস করে না, যারা শোষণমুক্ত সমাজ চায় না, তারাই আবার একত্র হচ্ছে। পরাজিত শক্তি গোপনে সংগঠিত হয়ে ফের ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংস্কার কার্যকর করা। দেরি করলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠবে। গণতন্ত্রের বিরোধীরা সক্রিয় হয়ে দেশকে আবার অস্থিতিশীল করতে পারে। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াই দেশের মঙ্গল।
তিনি আরও বলেন, মবোক্রেসি, হত্যা, গুম, ছিনতাই ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। এসব ঘটনায় নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক কর্মীরা গভীর উদ্বিগ্ন। এখন আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। যদি এই সুযোগ কাজে না লাগানো যায়, তাহলে বাংলাদেশ অনেক বছর পিছিয়ে পড়বে। প্রতিবার অভ্যুত্থান ঘটবে, মানুষ প্রাণ দেবে, কিন্তু আমরা যদি দায়িত্বশীল না হই তাহলে সব ব্যর্থ হবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না।
‘একাত্তর প্রশ্নে কোনো আপোস নয়’
ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্র—এই দুটি বিষয়ে কোনো আপোস নেই। অন্য যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। গণতন্ত্র মানেই হলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান, সহনশীলতা ও ভিন্ন মতকে সম্মান জানানো। আমরা আশাবাদী, আলোচনা করেই আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফিরতে পারব।
সাকি ও অন্যদের মন্তব্য
আলোচনায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে একটি ষড়যন্ত্র চলছে। মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড এবং গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনা এর প্রমাণ। এর মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটি বিষয় এখন রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর কোনোটিকে বাদ দিয়ে বা দেরি করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শেখ শহিদুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডি’র তানিয়া রব, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণফোরামের মিজানুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, জাতীয় নাগরিক পার্টির আখতার হোসেন, বাংলাদেশ জাসদের নাজমুল হক প্রধান এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নঈম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।