অনলাইন ডেস্ক
চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইসলামের ইতিহাস, সাধারণ ইতিহাস ও দর্শনের শিক্ষকদের। অথচ বোর্ডের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষিত শিক্ষক রয়েছেন। এ কারণে সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
অনেকেই বলছেন, ভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকরা আইসিটির কারিগরি বিষয় যেমন প্রোগ্রামিং, এইচটিএমএল, হার্ডওয়্যার কিংবা সফটওয়্যার বুঝবেন না। এতে করে সঠিক মূল্যায়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, যেসব শিক্ষক আইসিটিতে অভিজ্ঞ, শুধু তাদেরই খাতা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রুনা নাছরীন জানান, কিছু শিক্ষক অন্য বিষয়ের হলেও আইসিটিতে দক্ষতা রয়েছে বলে আবেদন করেছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশে তাঁদেরই পরীক্ষক করা হয়েছে।
তবে খাতা মূল্যায়নের তালিকা বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, মোট ২৫৩ জন শিক্ষক এই কাজ করছেন। এর মধ্যে ২৬ জন প্রধান পরীক্ষক, যার মধ্যে ১৯ জন আইসিটি শিক্ষক, বাকিরা ভিন্ন বিষয়ের। বাকি ২২৭ জন পরীক্ষকের মধ্যে ১৮০ জন আইসিটি বিষয়ের হলেও ৪৭ জন শিক্ষক ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, প্রাণীবিদ্যা, গণিতসহ অন্যান্য বিষয়ের।
অভিযোগ উঠেছে, অনেক শিক্ষক তথ্য গোপন করে পরীক্ষক হওয়ার আবেদন করেন এবং বোর্ডের একটি মহল টাকার বিনিময়ে তাদের সুযোগ করে দেয়। এর ফলে আইসিটির মতো কারিগরি বিষয়ের খাতা যাচাই করছেন এমন শিক্ষকরা, যাঁদের ওই বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা নেই।
এক আইসিটি শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রোগ্রামিং বা ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে যারা কাজ করেন না, তারা কীভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন?’
এক অভিভাবক আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমার সন্তান কঠোর পরিশ্রম করে পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু যদি যোগ্য শিক্ষক দিয়ে খাতা না দেখা হয়, তাহলে সে ন্যায্য ফল পাবে না।’
এ বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান মো. শামছুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
		