গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বহু ফিলিস্তিনি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব হামলায় অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকে গাজা সিটির আল-আহলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই হামলা এমন সময় চালানো হলো, যখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উত্তর গাজার অনেক এলাকাবাসীকে সরে যেতে বলেছিল। যুদ্ধ শুরুর পর এটি অন্যতম বড় স্থানত্যাগের নির্দেশ।
গাজা সিটির পূর্বাংশের শুজাইয়া, তুফাহ ও জাইতুন এলাকায় বড় ধরনের বিমান হামলা চালানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে বিস্ফোরণের আলো, আগুনের শিখা ও ঘন ধোঁয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাইতুন এলাকার একটি স্কুলে হামলা হয়, যেখানে অনেক বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন আল-শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে চালানো হামলার শিকার।
ইসরায়েল আগেই ওইসব এলাকার মানুষকে সরতে বলেছিল। অনেকে দক্ষিণে না গিয়ে গাজা সিটির পশ্চিম দিকে চলে যান।
সাত সন্তানের মা আবির তালবা জানান, “আমরা সবকিছু ফেলে চলে এসেছি। ফোনে জানানো হয়—এখন এটি যুদ্ধক্ষেত্র, তাই দ্রুত এলাকা ছাড়তে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই নিয়ে সাতবার আমাদের ঘর ছাড়তে হলো। এখন আমরা রাস্তায়, খাবার নেই, পানি নেই। বাচ্চারা ক্ষুধায় কাঁদছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা ও স্থানত্যাগের নির্দেশ ইসরায়েলের স্থল অভিযান আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিতে পারে।
তবে ইসরায়েলি কিছু জেনারেল মনে করছেন, গাজায় বেশিরভাগ সামরিক লক্ষ্য ইতিমধ্যে পূরণ হয়েছে। সাবেক সেনা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধ গেরিলা রূপ নিলে সাধারণ মানুষ ও সেনাদের প্রাণহানি আরও বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে এখন সবাই নজর রাখছে। যদিও তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে, তবুও ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে যুদ্ধবিরতির দিকে এগোনোর জন্য।