ডেস্ক রিপোর্ট
রাঙামাটির কাউখালীতে নারী সমাবেশে অংশ নিয়ে ফেরার পথে ইউল্যাবের শিক্ষক অলিউর সান, অধিকারকর্মী মারজিয়া প্রভা ও ছাত্রনেত্রী নূজিয়া হাসিন রাশার ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ।
আজ (সোমবার) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটি চিহ্নিত হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। সংবাদ সম্মেলনে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, “১২ জুন কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৯তম বার্ষিকীতে কাউখালীতে আয়োজিত নারী সমাবেশ শেষে ঢাকায় ফেরার সময় আমাদের তিন অতিথির ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়, বরং এর পেছনে রাষ্ট্রীয় মদদ রয়েছে বলেই আমরা মনে করি।”
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত হামলাকারীরা হলেন কাউখালী সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্রদল নেতা মো. ইমরান হোসেন, নাঈম হোসেন হিমেল ও ফাহিম। এদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা, ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি উষাতন চাকমা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং ভুক্তভোগী অলিউর সান, মারজিয়া প্রভা ও নূজিয়া হাসিন রাশা।
ভুক্তভোগীরা সরাসরি ঘটনার বর্ণনা দেন। অলিউর সান বলেন, “আমাদের আটকিয়ে মারধর করা হয়, এমনকি সেনা ক্যাম্পে তুলে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ জায়গাটি কোন থানার আওতায় পড়ে তা নিয়েই দ্বিধায় পড়ে যায়।”
মারজিয়া প্রভা বলেন, “হামলার ধরন এবং পরে সেনা ক্যাম্পে নেওয়ার হুমকি থেকেই স্পষ্ট, হামলাকারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আমরা চিহ্নিত হামলাকারীদের শাস্তি চাই।”
সংবাদ সম্মেলনে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
* হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার
* কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলার পুনঃতদন্ত ও বিচার
* সেনা টহল ও হয়রানি বন্ধ
* সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত
* পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার
নীতি চাকমা আরও বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সামরিক আধিপত্য চলছে, তারই ধারাবাহিকতা এই হামলা। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের এই আন্দোলন চলবে।”
এদিন বক্তারা একযোগে বলেন, পাহাড়-সমতলের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ভয় দেখিয়ে দমানো যাবে না। “পাহাড় কি সমতলে, লড়াই হবে সমান তালে” এই স্লোগানের বাস্তব প্রতিফলন ঘটিয়ে তারা সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।